আমাদের দেশে তিনটি স্বীকৃত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে; অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি ও হার্বাল। আমরা রোগাক্রান্ত অবস্থায় উক্ত তিন ধরনের চিকিৎসার কোন একটি বা একাধিক গ্রহন করে থাকি। তাই এই তিন ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থার চিকিৎসকদের যোগ্যতা সম্পর্কে আমাদের জানা উচিৎ। চিকিৎসকের যোগ্যতা সম্পর্কে জানার ধারাবাহিক আলোচনার প্রথম পর্ব: আ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক ।
অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা
মূলত চিকিৎসা বলতে অ্যালোপ্যাথিকেই বোঝানো হয়। এটিই আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। আসুন এবার আমরা এ চিকিৎসা ব্যবস্থার চিকিৎসকদের যোগ্যতা সম্পর্কে জেনে নেই ।
(১) সনদবিহীন (সার্টিফিকেটহীন) চিকিৎসক ও পল্লী চিকিৎসক: সাধারণত গ্রাম ও শহরে যারা নিজেরা ঔষধ বিক্রয় করেন তারাই এ ধরনের চিকিৎসক। এ ধরনের চিকিৎসকের কোন সার্টিফিকেট ( চিকিৎসা শিক্ষার প্রমানপত্র হিসেবে) নেই কিংবা এল.এম.এফ, আর.এম.পি ইত্যাদি নামে অস্বীকৃত সনদ রয়েছে (বিভিন্ন সংস্থা ব্যবসায়ীক ভিত্তিতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে থাকে এবং তাদের নিজস্ব সনদ প্রদান করে থাকে)। এ ধরনের চিকিৎসকদের জ্ঞান সীমিত এবং শুধু মাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের অতিসাধারণ রোগ চিকিৎসার উপযুক্ত। উল্লেখ্য এ ধরনের চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক এবং অধিক মূল্যমানের ঔষধ সেবন না করাই উত্তম।
স্নাতকোত্তর সাধারণ প্রশিক্ষণ: সার্টিফিকেট পর্যায়ের স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণ, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বীকৃত নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রশিক্ষণ হতে পারে যেমন- মেডিসিন, স্ত্রী ও প্রসুতি বিদ্যা, শিশু রোগ ইত্যাদি।
পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ট্রেনিং) : সার্টিফিকেট পর্যায়ের ¯œাতকোত্তর প্রশিক্ষণ, তবে স্বীকৃত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রশিক্ষণ হতে পারে যেমন- মেডিসিন, স্ত্রী ও প্রসুতি বিদ্যা, শিশু রোগ ইত্যাদি।
স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা: বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ডিগ্রী হতে পারে; যেমন- হৃদরোগ, চর্ম ও যৌণ, নাক-কান-গলা, স্ত্রীরোগ ও প্রসুতী বিদ্যা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি।
স্নাতকোত্তর ডিগ্রী: এম-এস, এম-ফিল, এম-ডি ইত্যাদি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী । আমাদের দেশে এমসিপিএস ও এফসিপিএস -কেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। স্নাতকোত্তর ডিগ্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেয়া হয়ে থাকে। যেমন- মেডিসিন, সার্জারী, হৃদরোগ, শিশুরোগ, মূত্ররোগ, মানসিক রোগ, স্নায়ুরোগ ইত্যাদি। যে ডাক্তার যে বিষয়ে এ ধরনের ডিগ্রী পেয়েছেন তিনি ঐ ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফেলোশিপ ও সদস্যপদ রয়েছে, যেগুলো স্নাতকোত্তর যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এগুলো কোন ডিগ্রী নয়। যেমন- ডব্লু এইচও ফেলোশিপ।
এমবিবিএস পর্যায়ের ডাক্তারদের পদমর্যাদা অনুসারে শ্রেণীবিন্যাস (উচ্চক্রম থেকে নিম্নক্রম) করা যেতে পারে। বিভিন্নভাবে এই শ্রেণী বিন্যাস করা যায়। যেমন- ( এখানে উচ্চতর থেকে নিম্নতর ক্রম দেখানো হলো)
সরকারী জেনারেল হাসপাতাল পর্যায়ে: সিনিয়র কনসালটেন্ট, কনসালটেন্ট, জুনিয়র কনসালটেন্ট, মেডিকেল অফিসার।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যায়ে: অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক। এছাড়াও এধরনের হাসপাতালে আরও একটি পদমর্যাদার ধাপ রয়েছে, যেমন- রেজিস্টার, সহকারী রেজিস্টার, মেডিকেল অফিসার।
সকল রোগীর সঠিক চিকিৎসা হোক
এই কামনায়
সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম
0 Comments